বাংলাদেশ বিরোধী সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় দেশের সকল ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে ঐক্যের ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবিরসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা।
বুধবার (৫ ডিসেম্বর) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক জোটের আয়োজনে ‘বিপ্লবত্তোর ছাত্র ঐক্য’ শীর্ষক ছাত্রসংগঠনের নেতৃবৃন্দের আলোচনায় এ ঐক্যের ডাক দেওয়া হয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে ঐক্যের বিকল্প নেই উল্লেখ করে রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনগুলোর কেন্দ্রীয় নেতারা এ ঘোষণা দেন।
জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া ছাত্র জনতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম বলেন, এই জাতি যতদিন টিকে থাকবেন, ততদিন তাদের কথা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তাদের সকলের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, বর্তমানে কাঠগড়ায় আমরা যেভাবে হাসিনাকে দায়ী করছি, ঐক্যবদ্ধ না থাকলে ভবিষ্যতে এই মঞ্চে যারা আছে তাদেরকে একইভাবে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। তাই এই অভ্যুত্থান ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না।
ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, যেভাবে বিজেপি আক্রমণাত্মক আচরণ করছে এতে বুঝা যায় আমরা সত্যিকার অর্থে সংকটে আছি। এই সরকারকে আমরা সম্মিলিতভাবে সহযোগিতা করবো। এ সময় জাতীয় ছাত্র কাউন্সিল গঠনের দাবি জানান তিনি।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদ বলেন, শেখ হাসিনা আইয়ুব খানের কাছ থেকে শিক্ষা নেন নি। আইয়ুব খান তাও তার দেশে থাকতে পেরেছিলেন আর হাসিনা পালিয়ে গেছেন। আমাদের দেশে সাম্রাজ্যবাদী হস্তক্ষেপ আগেও ছিল এখনও আছে। ভারতের যে চক্রান্ত তা যদি আমরা না বুঝি তাহলে বিপ্লব ব্যর্থ হবে। ভারতের মিডিয়ার প্ররোচনায় আমরা বিভাজিত হব না।
বাংলাদেশ জাতীয় ছাত্র সমাজের আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম বলেন, শেখ হাসিনার পতনের পর যে ছাত্র সংগঠন গলো আন্দোলন করেছে তাদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। সরকার গঠনে কোনও ছাত্র সংগঠনের মতামত নেওয়া হয়নি। গুটিকয়েক ছাত্রদের গণভবনে ডেকে সরকার গঠন করা হয়েছে।
ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বরেন, ভারত এমন একটি রাষ্ট্র যারা কানাডার মতো দেশে অপারেশন চালায়, আর বাংলাদেশ তো তার পেটের ভিতরে। তাই আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সাংবাদিক জোটের ঐক্যের ডাক প্রশংসনীয়। ঐক্য ছাড়া জাতির সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়।
ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের সকল ছাত্র সংগঠনগুলোকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার প্রতিজ্ঞা করতে হবে। ছাত্রদলের পক্ষ থেকে আমি এই ঘোষণা করছি দেশের ক্লান্তিলগ্নে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে পথ চলবো। যে ঐক্যের ডাক এসেছে এটাতে আমরা সম্পূর্ণ একমত।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মাহমুদুল হাসান তানভীরের সভাপতিত্বে এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সুবর্ণ আস সাইফের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. সবিনা শরমীন, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. রইস উদ্দিন, ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. বিল্লাল হোসেইন, ইসলামি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের সভাপতি নুরুল বাশার আজিজী, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহসভাপতি জুয়েল, কেন্দ্রীয় শিবিরের আন্তর্জাতিক সম্পাদক মোতাসিম বিল্লাহ শাহেদী, শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আসাদুজ্জামান আসলাম, সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা, শাখা ছাত্রশিবিরের ইকবাল হোসেন, শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল আসাদুল্লাহ আসাদ, শাখা ইসলামি ছাত্র আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান আকাশ, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মো: নূর নবী, জাস্টিস ফর জুলাইয়ে মুবাশ্বির আল মঈন, জাস্টিস ফর জুলাইয়ের সজিবুর রহমান, ছাত্র অধিকার পরিষদের একেএম রাকিব, ছাত্রফন্ট জবি শাখার আহ্বায়ক ইভান তাহসিব। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় শিবিরের শিক্ষা সম্পাদক মো. মিকদাদ, কেন্দ্রীয় শিবিরের ছাত্রকল্যাণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, কেন্দ্রীয় শিবিরের ছাত্র আন্দোলন সম্পাদক আমিরুল ইসলাম, ইসলামি ছাত্র আন্দোলনের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান, ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা তৌসিব মাহাবুব সোহান, শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি ইব্রাহিম কবির মিঠু, শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান হিমেল, সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুল আরেফিন, শাখা ইসলামি ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি ওয়াদুদ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আহনাফ তাহমিদ ফাইয়াজ প্রমুখ।
Leave a Comment